বিষয়বস্তুতে চলুন

বাংলাদেশের ভাষা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
27.147.224.198 (আলাপ)-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে 103.166.22.1-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
Integrity2020 (আলোচনা | অবদান)
অনুবাদ, রচনাশৈলী, সম্প্রসারণ, সংশোধন, হালনাগাদ করা হল
৫ নং লাইন: ৫ নং লাইন:
| national =
| national =
| regional = [[সিলেটি ভাষা|সিলেটি]], [[চাকমা ভাষা|চাকমা]]
| regional = [[সিলেটি ভাষা|সিলেটি]], [[চাকমা ভাষা|চাকমা]]
| immigrant = [[বিহারি ভাষাসমূহ|বিহারি]], [[বর্মী ভাষা|বর্মী]], [[রোহিঙ্গা ভাষা|রোহিঙ্গা]]
| immigrant = [[বিহারি ভাষাসমূহ|বিহারি]], [[বর্মী ভাষা|বর্মী]], [[রোহিঙ্গা ভাষা|রোহিঙ্গা]]
| keyboard = [[বাংলা ইনপুট পদ্ধতি|বাংলা জাতীয় লেআউট]]
| keyboard = [[বাংলা ইনপুট পদ্ধতি|বাংলা জাতীয় লেআউট]]
| keyboard image = [[চিত্র:Bangladesh National Keyboard Layout.svg|200px]]
| keyboard image = [[চিত্র:Bangladesh National Keyboard Layout.svg|200px]]
| sign =
| sign =
| image =
| image =
| caption =
| caption =
|unofficial=[[বাংলা উপভাষা]], [[চাঁটগাঁইয়া ভাষা|চিটাইঙ্গা]]|image size=350px|minority=[[বর্মী ভাষা|বর্মী]], [[বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা|বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী]], [[চাকমা ভাষা|চাকমা]], [[ঢাকাইয়া উর্দু]], [[হাজং ভাষা|হাজং]], [[তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা|তঞ্চঙ্গ্যা]], [[সাদরি ভাষা|সাদরি]], [[হিন্দুস্তানী ভাষা|হিন্দি-উর্দু]], [[খাসি ভাষা|খাসি]], [[কোডা ভাষা|কোডা]], [[মুন্ডারি ভাষা|মুন্ডারি]], [[জয়ন্তিয়া ভাষা|প্নার]], [[সাঁওতালি ভাষা|সাঁওতালি]], [[ওয়ার ভাষা|ওয়ার-জৈন্তিয়া]], [[কুরুখ ভাষা|করুখ]], [[মালতো ভাষা|সাউরিয়া পাহাড়িয়া]], [[আটং ভাষা (চীন-তিব্বতি)|আটং]], [[চাক ভাষা|চাক]], [[কুকি ভাষা|কুকি-চিন]], [[শো ভাষা|শো]], [[বম ভাষা|বম]], [[ফালাম ভাষা|ফালাম]], [[হাকা চিন ভাষা|হাকা]], [[খুমি ভাষা|খুমি]], [[কোচ ভাষা|কোচ]], [[গারো ভাষা|গারো]], [[মেগাম ভাষা|মেগাম]], [[মৈতৈ ভাষা|মৈতৈ]], [[ককবরক ভাষা|ককবরক]], [[মিজো ভাষা|মিজো]], [[ম্রো ভাষা|ম্রু]], [[পাংখুয়া ভাষা|পাংখুয়া]], [[মারমা ভাষা|মারমা]]}}
|unofficial=[[চাঁটগাঁইয়া ভাষা|চিটাইঙ্গা]]}}
[[বাংলাদেশের সংবিধান|বাংলাদেশের সংবিধানের]] তৃতীয় অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, [[বাংলা ভাষা]] [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একমাত্র সরকারি ভাষা তথা রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় ভাষা।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_all_sections.php?id=957|শিরোনাম=গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|অধ্যায়ের-ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_sections_detail.php?id=957&sections_id=29340|বছর=|কর্ম=[[আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)|আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়]]|প্রকাশক=বাংলাদেশ সরকার|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|অধ্যায়=৩৷ রাষ্ট্রভাষা|আইএসবিএন=|সংগ্রহের-তারিখ=২০১৯-০৪-২৬}}</ref> প্রায় ৯৯% বাংলাদেশির মাতৃভাষ�� বাংলা। [[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ এশিয়ার]] একমাত্র ও বিশ্বের অন্যতম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ। [[বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭]] অনুযায়ী, বৈদেশিক সম্পর্ক ব্যতীত অন্যান্য সকল সরকারি কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার আবশ্যিক করেছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_pdf_part.php?id=705|শিরোনাম=বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|তারিখ=|ওয়েবসাইট=[[আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)|আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়]]|প্রকাশক=বাংলাদেশ সরকার|আর্কাইভের-ইউআরএল=|আর্কাইভের-তারিখ=|সংগ্রহের-তারিখ=2019-04-26}}</ref> বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র একভাষী রাষ্ট্র বলে বিবেচিত হলেও [[পার্বত্য চট্টগ্রাম]] এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বসবাস করে এমন [[বাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠী|বাংলাদেশি আদিবাসীগণ]] তাদের নিজ নিজ [[ভাষা]] (যেমন চাকমা, মারমা ইত্যাদি) ভাষায় কথা বলে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=|শিরোনাম=Language Situation in Bangladesh|শেষাংশ=ফকির|প্রথমাংশ=এ বি এম রেজাউল করিম|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১০|সাময়িকী=The Dhaka University Studies|খণ্ড=৬৭|পাতাসমূহ=৬৬-৭৭|সংগ্রহের-তারিখ=}}</ref> এছাড়াও বাংলাদেশে যেমন [[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম অঞ্চল]] এবং [[সিলেট বিভাগ|সিলেট অঞ্চল]] এর ভাষা আদর্শ বাংলা থেকে অনেকটাই ভিন্ন। স্বাধীনতা পূর্ব পর্যন্ত [[চাটগাঁইয়া ভাষা]] নাস্তালিক হরফে লিখা হতো।
[[বাংলাদেশের সংবিধান|বাংলাদেশের সংবিধানের]] তৃতীয় অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, [[বাংলা ভাষা]] [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একমাত্র সরকারি ভাষা তথা রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় ভাষা।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_all_sections.php?id=957|শিরোনাম=গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|অধ্যায়ের-ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_sections_detail.php?id=957&sections_id=29340|বছর=|কর্ম=[[আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)|আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়]]|প্রকাশক=বাংলাদেশ সরকার|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|অধ্যায়=৩৷ রাষ্ট্রভাষা|আইএসবিএন=|সংগ্রহের-তারিখ=২০১৯-০৪-২৬}}</ref> প্রায় ৯৯% বাংলাদেশির মাতৃভাষা বাংলা। [[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ এশিয়ার]] একমাত্র ও বিশ্বের অন্যতম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ। [[বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭]] অনুযায়ী, বৈদেশিক সম্পর্ক ব্যতীত অন্যান্য সকল সরকারি কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার আবশ্যিক করেছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_pdf_part.php?id=705|শিরোনাম=বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|তারিখ=|ওয়েবসাইট=[[আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)|আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়]]|প্রকাশক=বাংলাদেশ সরকার|আর্কাইভের-ইউআরএল=|আর্কাইভের-তারিখ=|সংগ্রহের-তারিখ=2019-04-26}}</ref> বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র একভাষী রাষ্ট্র বলে বিবেচিত হলেও [[পার্বত্য চট্টগ্রাম]] এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বসবাস করে এমন [[বাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠী|বাংলাদেশি আদিবাসীগণ]] তাদের নিজ নিজ [[ভাষা]] (যেমন চাকমা, মারমা ইত্যাদি) ভাষায় কথা বলে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=|শিরোনাম=Language Situation in Bangladesh|শেষাংশ=ফকির|প্রথমাংশ=এ বি এম রেজাউল করিম|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১০|সাময়িকী=The Dhaka University Studies|খণ্ড=৬৭|পাতাসমূহ=৬৬-৭৭|সংগ্রহের-তারিখ=}}</ref> এছাড়াও বাংলাদেশে যেমন [[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম অঞ্চল]] এবং [[সিলেট বিভাগ|সিলেট অঞ্চল]] এর ভাষা আদর্শ বাংলা থেকে অনেকটাই ভিন্ন। স্বাধীনতা পূর্ব পর্যন্ত [[চাটগাঁইয়া ভাষা]] নাস্তালিক হরফে লিখা হতো।
<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|তারিখ=2023-02-23|শিরোনাম=ULAB introduces Bangla and Literature Department|ইউআরএল=https://www.dhakatribune.com/bangladesh/2023/02/23/ulab-introduces-bangla-and-literature-department|ইউআরএল-অবস্থা=live|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://archive.today/30223233104/https://www.dhakatribune.com/bangladesh/2023/02/23/ulab-introduces-bangla-and-literature-department|আর্কাইভের-তারিখ=2023-02-23|সংগ্রহের-তারিখ=2023-02-26|ওয়েবসাইট=[[Dhaka Tribune]]}}</ref>
{| class="wikitable" align="right"
|+'''২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে বাংলাদেশের ভাষাগত বৈচিত্র্য'''<ref name="bbs.gov.bd">http://www.bbs.gov.bd › site › page Population-and-Housing-Census - বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো</ref>
!ভাষা
!জনসংখ্যা
|-
|[[বাংলা ভাষা|বাংলা]]
|১৬৩,৫০৭,০২৯
|-
|অন্যান্য
|১,৬৫১,৫৮৭
|-
|মোট
|১৬৫,১৫৮,৬১৬
|}
{{পাই রেখাচিত্র|thumb=right|caption="বাংলাদেশ জুড়ে কথিত ভাষাসমূহ" (২০২২)<ref name="bbs.gov.bd">http://www.bbs.gov.bd › site › page
Population-and-Housing-Census - বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো</ref>|label1=[[বাংলা ভাষা|বাংলা]]|value1=99|color1=#006a4e|label2=অন্যান্য|value2=1|color2=#f42a41}}


==বাংলাদেশ ও বাঙালী অধ্যুষিত অঞ্চলের ভাষা ==
==বাংলাদেশ ও বাঙালী অধ্যুষিত অঞ্চলের ভাষা ==


[[এথ্‌নোলগ]]-এর ২১ তম সংস্করণ (২০১৮) অনুসারে বাংলাদেশে ৪১ টি ভাষা প্রচলিত আছে সবকটি ভাষাই জীবিত। নিচের সারণিতে এগুলির বিবরণ দেয়া হল।
[[এথ্‌নোলগ]]-এর সংস্করণ (২০১৮) অনুসারে বাংলাদেশে ভাষা প্রচলিত আছে সবকটি ভাষাই জীবিত। নিচের সারণিতে বিবরণ দেয়া হল।

=== ইন্দো-আর্য ভাষা ===
বাংলাদেশের নিম্নভূমিগুলো [[বঙ্গ|বাংলার]] [[জাতিভাষাবিজ্ঞান|জাতি-ভাষাগত]] অঞ্চলের বৃহত���তর, কেন্দ্রীয় এবং পূর্ব অর্ধেক গঠন করে এবং [[বাংলা ভাষা]] দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী অর্থাৎ [[বাঙালি জাতি|বাঙালিরা]] বলে। এছাড়াও কিছু [[পূর্ব ইন্দো-আর্য ভাষা|পূর্ব ভারতীয়]] ভাষার বৈচিত্র‍্য রয়েছে, যেগুলোকে বাংলার উপভাষা বা পৃথক কিন্তু ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ভাষা হিসাবে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। এগুলোকে একটি [[ঔপভাষিক ধারাবাহিকতা|উপভাষা ধারাবাহিকতা]] গঠন হিসাবে ভাবা যেতে পারে।

* [[বাংলা উপভাষা|বাংলা শাখা]]:
** [[বাংলা ভাষা|প্রমিত বাংলা]]: সারা দেশে কথ্য – মূলত নদীয়া অঞ্চলের উপভাষা (আংশিকভাবে খুলনা বিভাগে), খুলনা বিভাগের বাকি উপভাষার খুব কাছাকাছি
** [[বঙ্গালী উপভাষা|বাঙ্গালী]]: বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলে ([[ঢাকা বিভাগ|ঢাকা]], [[খুলনা বিভাগ|খুলনা]], [[ময়মনসিংহ বিভাগ|ময়মনসিংহ]], [[মেঘনা বিভাগ|বৃহত্তর কুমিল্লা]], [[নোয়াখালী জেলা|নোয়াখালী]] এবং [[বরিশাল বিভাগ|বরিশাল]] অঞ্চল) সাধারণ পূর্ব বাংলা উপভাষা (প্রমিত বাংলার পাশে) কথ্য।
** [[চাটগাঁইয়া ভাষা|চট্টগ্রামী]]: [[চট্টগ্রাম জেলা|চট্টগ্রাম]], [[কক্সবাজার জেলা|কক্সবাজারের]] দক্ষিণ-পূর্ব জেলাগুলোতে এবং [[পার্বত্য চট্টগ্রাম|পার্বত্য চট্টগ্রামে]] অভিবাসীদের দ্বারাও বলা হয়।
** [[সিলেটি ভাষা|সিলেটি]]: সুরমা উপত্যকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ([[সিলেট বিভাগ]]) [[সিলেটি|সিলেটিদের]] দ্বারা কথ্য।
** [[ঢাকাইয়া কুট্টি উপভাষা|ঢাকাইয়া কুট্টি]]: [[পুরান ঢাকা|পুরান ঢাকার]] লোকেরা এই উপভাষায় কথা বলে।
** [[নোয়াখালীয় উপভাষা|নোয়াখাইল্লা]]: [[নোয়াখালী জেলা|নোয়াখালী]], [[ফেনী জেলা|ফেনী]] ও [[লক্ষ্মীপুর জেলা|লক্ষ্মীপুরের]] পাশাপাশি [[মেঘনা বিভাগ|বৃহত্তর কুমিল্লা]] ও উত্তর চট্টগ্রাম জেলার কিছু অঞ্চলের লোকেরা এই উপভাষাটি বলে।
** [[বরেন্দ্রী উপভাষা|বরেন্দ্রী]]: পশ্চিম অঞ্চলের লোকেদের দ্বারা কথ্য ([[রাজশাহী বিভাগ]]); উত্তর বাংলা উপভাষার অংশ।
** [[রংপুরী ভাষা|রংপুরী]]: উত্তরাঞ্চলের মানুষের দ্বারা কথ্য ([[রংপুর বিভাগ]]); বরেন্দ্রী উপভাষার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
* উপজাতি ভাষা:
** [[চাকমা ভাষা|চাকমা]]: [[পার্বত্য চট্টগ্রাম|পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে]] কথ্য। [[তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহ|তিব্বত-বর্মন ভাষার]] সাথে সম্পর্কহীন যা সাধারণত এই অঞ্চলে পাওয়া যায়। অনেকটা [[চাটগাঁইয়া ভাষা|চট্টগ্রামের]] সাথে মিলে যায়।
** [[বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা|বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী]]: বাংলাদেশে বসবাসকারী বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিদের দ্বারা একটি [[ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ|ইন্দো-আর্য ভাষা]]। বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী বাংলা ভাষা থেকে আলাদা এবং এতে [[তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহ|তিব্বত-বর্মন ভাষার]] অনেক বৈশিষ্ট্য ও উপাদান রয়েছে।
** [[হাজং ভাষা|হাজং]]: মূলত একটি তিব্বত-বর্মীয় ভাষা যা সময়ের সাথে সাথে একটি ভারতীয় ভাষায় স্থানান্তরিত হয়েছে।
** [[তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা|তংচঙ্গ্যা]]: পার্বত্য চট্টগ্রামের [[তঞ্চঙ্গ্যা|তঞ্চঙ্গ্যা জনগণ]] কথিত। এটি [[চাকমা ভাষা|চাকমাদের]] সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
* [[সাদরি ভাষা|সাদরি]]: এটি ভারতের [[ঝাড়খণ্ড|ঝাড়খণ্ডেরও]] একটি প্রধান ভাষা। আদিবাসীরা যারা তাদের পুরানো ভাষা পরিত্যাগ করেছে তাদের দ্বারা সারা বাংলাদেশে চা বাগানে ব্যাপকভাবে কথা বলা হয়।
* [[বিহারি ভাষাসমূহ|বিহারী ভাষা]]: বিহার, ভারতের বিহার থেকে আসা [[বিহারী মুসলিম|বিহারি মুসলমানদের]] ভাষা যারা দেশভাগের সময় এসেছিলেন।

=== অ-ইন্দো-আর্য ভাষা ===
এই অঞ্চলের অ-ইন্দো-আর্য আদিবাসী ভাষাগুলো অস্ট্রোএশিয়াটিক, দ্রাবিড় এবং তিব্বতী-বর্মী পরিবারের সদস্য। এসব ভাষার বেশির ভাগই পাহাড়ি এলাকায় কথ্য।

==== অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষা ====
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (যেমন [[খ্‌মের ভাষা|খ্‌মের]] এবং [[ভিয়েতনামী ভাষা|ভিয়েতনামী]]) আরও ব্যাপকভাবে কথ্য এবং সুপরিচিত [[অস্ট্রো-এশীয় ভাষাসমূহ|অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষাগুলো]] কথ্য হলেও, সেই পরিবারের ছোট ভাষাগুলো উত্তর ও পূর্ব বাংলাদেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের দ্বারা বলা হয়। বাংলাদেশে প্রতিনিধিত্বকারী অস্ট্রো-এশিয়াটিক দুটি শাখা রয়েছে।

* [[খাসি ভাষা|খাসি]]: সিলেট বিভাগে কথ্য। এছাড়াও মেঘালয়, ভারতের একটি প্রধান ভাষা
* [[জয়ন্তিয়া ভাষা|প্নার/জয়ন্তিয়া]]: সিলেট বিভাগে কথ্য
* [[ওয়ার ভাষা|ওয়ার]]: সিলেট বিভাগে কথিত
* [[সাঁওতালি ভাষা|সাঁওতালি]]: রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কথ্য। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খন্ডে ব্যাপকভাবে কথ্য
* [[মুন্ডারি ভাষা|মুন্ডারি]]: রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কথ্য।
* [[কোডা ভাষা|কোডা]]: রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কথ্য।

==== দ্রাবিড় ভাষা ====
পশ্চিম বাংলাদেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে দুটি [[দ্রাবিড় ভাষাসমূহ|দ্রাবিড় ভাষা]] বলা হয়ে থাকে।

* [[কুরুখ ভাষা|কুরুখ-]] সিলেটের চা বাগানে কিছ�� কুরুখ লোক বাস করলেও প্রধানত [[সাদরি ভাষা|সাদরি]] ভাষায় কথা বলে
* [[মালতো ভাষা|সাউরিয়া পাহাড়িয়া]]

==== তিব্বতী-বর্মী ভাষা ====
ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর ও পূর্ব প্রান্ত বরাবর পার্বত্য অঞ্চলে মূলত [[তিব্বতি-বর্মী ভাষাসমূহ|তিব্বতী-বর্মী ভাষার]] ভাষাভাষীরা বসবাস করে। আদিবাসী তিব্বতী-বর্মী-ভাষী সম্প্রদায়গুলো বাংলাদেশের উত্তর, পূর্ব এবং বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব অংশে, প্রাথমিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের মাধ্যমে পাওয়া যায়।

* [[রাখাইন ভাষা|আরাকানি]]: আরকানি বা মারমা বা রাখাইন ভাষাও বলা হয়। প্রধানত পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং দক্ষিণ কক্সবাজারে কথা বলা হয়। এছাড়াও [[রাখাইন রাজ্য]], মিয়ানমারের একটি প্রধান ভাষা।
* [[আটং ভাষা (চীন-তিব্বতি)|আ'টং]]: ময়মনসিংহ বিভাগে কথ্য।
* [[চাক ভাষা|চাক]]: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য।
* [[কুকি ভাষা|চিন ভাষা]]: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য
** [[শো ভাষা|অশো]]
** [[বম ভাষা|বাওম]]
** [[ফালাম ভাষা|ফালাম]]
** [[হাকা চিন ভাষা|হাকা]]
** [[খুমি ভাষা|খুমি]]
** [[মারা ভাষা|মারা]]
* [[কোচ ভাষা|কোচ]]: ময়মনসিংহ বিভাগে কথ্য
* [[গারো ভাষা|গারো]]: প্রধানত ময়মনসিংহ বিভাগে কথ্য। এছাড়াও [[মেঘালয়]], ভারতের একটি প্রধান ভাষা।
* [[মেগাম ভাষা|মেগাম]]: ময়মনসিংহ বিভাগে কথিত গারোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত
* [[মৈতৈ ভাষা|মৈতৈ (মণিপুরী)]]: সিলেট বিভাগে কথ্য। এছাড়াও ভারতের [[মণিপুর]] রাজ্যের একটি প্রধান ভাষা
* [[মিজো ভাষা|মিজো]]: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য। এছাড়াও ভারতের [[মিজোরাম]] রাজ্যের একটি প্রধান ভাষা
* [[ম্রো ভাষা|ম্রু]]: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য।
* [[পাংখুয়া ভাষা|পাংখুয়া]]: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য
* [[ককবরক ভাষা|ত্রিপুরী]]: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য। ভারতের [[ত্রিপুরা]] রাজ্যের একটি প্রধান ভাষা


{|class=wikitable
{|class=wikitable
|-
|-
! ভাষার নাম!! ভাষাভাষীর সংখ্যা !! অবস্থান !! উপভাষা !! শ্রেণীকরণ
! ভাষার নাম!! ভাষাভাষীর সংখ্যা !! অবস্থান !! উপভাষা !! শ্রেণীকরণ
২৪ নং লাইন: ১০২ নং লাইন:
| [[অসমীয়া ভাষা|অসমীয়া]]|| || || || ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
| [[অসমীয়া ভাষা|অসমীয়া]]|| || || || ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
|-
|-
| [[আরাকানীয় ভাষা|আরাকানীয়]]|| ২ লক্ষ|| দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ; পার্বত্য চট্টগ্রাম|| মারমা (পাহাড়ি), রাখাইন (উপকূলীয়)|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, লোলো-বর্মী, বর্মী, দক্ষিণ বর্মী
| [[ ভাষা|আরাকানীয়]]|| ২ লক্ষ|| দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ; পার্বত্য চট্টগ্রাম|| মারমা (পাহাড়ি), রাখাইন (উপকূলীয়)|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, লোলো-বর্মী, বর্মী, দক্ষিণ বর্মী
|-
|-
| [[আশো চিন ভাষা|আশো চিন]]|| ১৪২২ (১৯৮১ আদমশুমারি)|| পার্বত্য চট্টগ্রাম|| চট্টগ্রাম, লেমিয়ো, মিনবু, সাইংবাউন, সান্দোওয়ে, থায়েতমিয়ো|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, দক্ষিণী, শো
| [[ ভাষা|আশো চিন]]|| ১৪২২ (১৯৮১ আদমশুমারি)|| পার্বত্য চট্টগ্রাম|| চট্টগ্রাম, লেমিয়ো, মিনবু, সাইংবাউন, সান্দোওয়ে, থায়েতমিয়ো|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, দক্ষিণী, শো
|-
|-
| [[উসুই ভাষা|উসুই]]|| ৪ হাজার|| পার্বত্য চট্টগ্রাম|| || ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, শ্রেণীকরণ নেই
| [[উসুই ভাষা|উসুই]]|| ৪ হাজার|| পার্বত্য চট্টগ্রাম|| || ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, শ্রেণীকরণ নেই
৬০ নং লাইন: ১৩৮ নং লাইন:
| [[প্নার ভাষা|প্নার]]|| ৪ হাজার|| উত্তর-পূর্বে ভারতের সাথে সীমান্তে; জাফলং, তামাবিল, জৈন্তাপুর|| || অস্ট্রো-এশীয়, মন-খমের, উত্তর মন-খমের, খাসীয়
| [[প্নার ভাষা|প্নার]]|| ৪ হাজার|| উত্তর-পূর্বে ভারতের সাথে সীমান্তে; জাফলং, তামাবিল, জৈন্তাপুর|| || অস্ট্রো-এশীয়, মন-খমের, উত্তর মন-খমের, খাসীয়
|-
|-
| [[পাংখু ভাষা|পাংখু]]|| ২২৭৮ (১৯৮১ আদমশুমারি)|| বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি|| || চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
| [[ ভাষা|পাংখু]]|| ২২৭৮ (১৯৮১ আদমশুমারি)|| বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি|| || চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
|-
|-
| [[ফালাম চিন ভাষা|ফালাম চিন]]|| || || চোরেই, জান্নিয়াত|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, উত্তর
| [[ফালাম চিন ভাষা|ফালাম চিন]]|| || || চোরেই, জান্নিয়াত|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, উত্তর
৬৮ নং লাইন: ১৪৬ নং লাইন:
| [[বাংলা ভাষা|বাংলা]]|| ২৬ কোটির বেশি|| || কেন্দ্রীয়, পশ্চিমী (খারিয়া ঠার, মাল পাহাড়িয়া, সারাকি), দক্ষিণ-পশ্চিমী বাংলা, উত্তর বাংলা (কোচ, শ্রীপুরী), রাজবংশী, বাহে, পূর্ব বাংলা (পূর্ব কেন্দ্রীয়, সিলেটি), হাইজং, দক্ষিণ-পূর্বী বাংলা (চাকমা), গান্ডা, ভাঙ্গা|| ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
| [[বাংলা ভাষা|বাংলা]]|| ২৬ কোটির বেশি|| || কেন্দ্রীয়, পশ্চিমী (খারিয়া ঠার, মাল পাহাড়িয়া, সারাকি), দক্ষিণ-পশ্চিমী বাংলা, উত্তর বাংলা (কোচ, শ্রীপুরী), রাজবংশী, বাহে, পূর্ব বাংলা (পূর্ব কেন্দ্রীয়, সিলেটি), হাইজং, দক্ষিণ-পূর্বী বাংলা (চাকমা), গান্ডা, ভাঙ্গা|| ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
|-
|-
| [[বাওম চিন ভাষা|বাওম চিন]]|| ৫৭৩৩ (১৯৮১ আদমশুমারি)|| পার্বত্য চট্টগ্রাম|| || চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
| [[ ভাষা|বাওম চিন]]|| ৫৭৩৩ (১৯৮১ আদমশুমারি)|| পার্বত্য চট্টগ্রাম|| || চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
|-
|-
| [[বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা|বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী]]|| ৪০ হাজার|| || রাজার গাং, মাদই গাং|| ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
| [[বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা|বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী]]|| ৪০ হাজার|| || রাজার গাং, মাদই গাং|| ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
৭৬ নং লাইন: ১৫৪ নং লাইন:
| [[মুন্ডারি ভাষা|মুন্ডারি]]|| || || হাসাদা, লাতার, নাগুরি, কেরা|| অস্ট্রো-এশীয়, মুন্ডা, উত্তর মুন্ডা, খেরওয়ারি, মুন্ডারি
| [[মুন্ডারি ভাষা|মুন্ডারি]]|| || || হাসাদা, লাতার, নাগুরি, কেরা|| অস্ট্রো-এশীয়, মুন্ডা, উত্তর মুন্ডা, খেরওয়ারি, মুন্ডারি
|-
|-
| [[ম্রু ভাষা|ম্রু]]|| ৮০ হাজার|| পার্বত্য চট্টগ্রামের ২০০টি গ্রামে|| || চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, ম্রু
| [[ ভাষা|ম্রু]]|| ৮০ হাজার|| পার্বত্য চট্টগ্রামের ২০০টি গ্রামে|| || চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, ম্রু
|-
|-
| [[মিজো ভাষা|মিজো]]|| ১ হাজার|| মিজো পাহাড়, চট্টগ্রাম, সিলেট|| রালতে, দুলিয়েন, নগেলতে, মিজো, লে|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
| [[মিজো ভাষা|মিজো]]|| ১ হাজার|| মিজো পাহাড়, চট্টগ্রাম, সিলেট|| রালতে, দুলিয়েন, নগেলতে, মিজো, লে|| চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
৯৮ নং লাইন: ১৭৬ নং লাইন:
| [[হো ভাষা|হো]]|| || || || অস্ট্রো-এশীয়, মুন্ডা, উত্তর মুন্ডা, খেরওয়ারি, মুন্ডারি
| [[হো ভাষা|হো]]|| || || || অস্ট্রো-এশীয়, মুন্ডা, উত্তর মুন্ডা, খেরওয়ারি, মুন্ডারি
|}
|}

== অন্যান্য ভাষা ==

=== ইংরেজি ===
{{মূল নিবন্ধ|Bangladeshi English}}২০২৩ সালে ইংরেজি এখন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ভাষা। ১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন আইন শুরু হওয়ার আগে, সরকারি কাজে ইংরেজির যথেষ্ট উপস্থিতি ছিল, তবে ১৯৮৭ সাল থেকে সরকারে ইংরেজির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। দেশের ব্রিটিশ উপনিবেশের কারণে, ইংরেজি এখনও বাংলাদেশে একটি ব্যাপকভাবে কথিত এবং সাধারণভাবে বুঝতে পারা ভাষা।<ref name="Bangladesh.com">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.bangladesh.com/culture/languages/|শিরোনাম='Language of Bangladesh, Culture|কর্ম=Bangladesh.com}}</ref> সকল [[বাংলাদেশের বিদ্যালয়ের তালিকা|স্কুল]], [[বাংলাদেশের কলেজের তালিকা|কলেজ]] ও [[বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা|বিশ্ববিদ্যালয়ে]] ইংরেজি বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে পড়ানো হয়। উপরন্তু, বাংলাদেশে ইংরেজি-মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে যা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে।<ref name="The Daily Observer">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.observerbd.com/details.php?id=195223|শিরোনাম=English medium education system in Bangladesh|কর্ম=The Daily Observer}}</ref> [[ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ]] ইংরেজি ভাষার কোর্স অফার করে।

অন্যান্য সার্ক দেশগুলোর পরিস্থিতির মতো, ইংরেজি ভাষার জ্ঞানে উল্লেখযোগ্য বৈষম্য রয়েছে; জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সাবলীলভাবে বা এমনকি স্থানীয়ভাবে ইংরেজিতে কথা বলে (বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণির মধ্যে), যখন জনসংখ্যার এমনকি একটি বড় অংশের ইংরেজি সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান নেই। মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের মধ্যে অনেকেই পেশাগত প্রয়োজনের কারণে সাবলীলভাবে পড়তে ও লিখতে পারে, তবে ইংরেজি বলতে তাদের অসুবিধা হতে পারে।

ঔপনিবেশিক আমলে আইনগুলো ইংরেজিতে লেখা হতো। বর্তমানে, বেশিরভাগ আইন বাংলায় লেখা হয়, ব্যতিক্রম হল ১৯৮৭ সালের আগে পাস করা আইনগুলোর সংশোধন, যা সাধারণত ইংরেজিতে লেখা হয়। সরকার এবং ব্যাঙ্কসমূহে ব্যবহৃত অনেক আইনি, প্রশাসনিক এবং আর্থিক ফর্ম কেবলই ইংরেজিতে। বিচার বিভাগেও ইংরেজি ব্যবহৃত হয়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.daily-sun.com/post/294179|শিরোনাম=Bangla Rules in All Domains of National Life|কর্ম=[[Daily Sun (Bangladesh)|Daily Sun]]|সংগ্রহের-তারিখ=2019-04-25|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20190425232223/https://www.daily-sun.com/post/294179/Bangla-Rules-in-All-Domains-of-National-Life|আর্কাইভের-তারিখ=2019-04-25|ইউআরএল-অবস্থা=live}}</ref>

=== আরবি ===
[[চিত্র:Shahjalal_International_Airport_(10).jpg|থাম্ব|বাংলাদেশের বৃহত্তম আন্ত��্জাতিক বিমানবন্দর, [[ঢাকা|ঢাকার]] [[হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর|হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে]] আরবীতে সাইনবোর্ড রয়েছে।]]
১২০৩ খ্রিস্টাব্দে [[ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজি|মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজির]] বাংলা জয়ের পর থেকে [[আরবি ভাষা|আরবি]] ({{Lang|ar|عربي}}) [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ রাজের]] সময় পর্যন্ত একটি সরকারী ভাষার মর্যাদা উপভোগ করেছিল। যাইহোক, এটির উপস্থিতি 8ম শতাব্দীতে বাণিজ্যের ভাষা হিসাবে। ১৩শ শতাব্দীতে, মুসলিম ধর্ম প্রচারক তাকিউদ্দীন আল-আরাবি বাংলাদেশের প্রথম দিকের ইসলামিক প্রতিষ্ঠান যা অক্ষত ধ্বংসাবশেষ বলে মনে করা হয় তা প্রতিষ্ঠা করেন। কাদি রুকনুদ্দিন সমরকান্দির {{প্রতিবর্ণীকরণ|ar|Ḥawḍ al-Ḥayāh}} (দ্বাদশ শতক), [[শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা|আবু তাওওয়ামার]] {{প্রতিবর্ণীকরণ|ar|Maqāmāt}}, {{প্রতিবর্ণীকরণ|ar|Majmūʿah Khānī fī ʿAyn al-Maʿānī}}(১২৮০) কামিলুদ্দিনের কৃতকর্ম হিসেবে মধ্যযুগীয় বাংলায় [[আরবি সাহিত্য]] প্রথম বিকাশ লাভ করে। ১৪শতকের বাঙালি পণ্ডিত [[নূর কুতুব আলম|নূর কুতুব আলমের]]। ইসলামিক পণ্ডিত মুহাম্মদ ইবনে ইয়াজদান বখশ বাংলা একডালায় হাতে [[সহীহ বুখারী|সহীহ আল-বুখারির]] তিনটি খণ্ড প্রতিলিপি করে সুলতান [[আলাউদ্দিন হোসেন শাহ|আলাউদ্দিন হোসেন শাহকে]] উপহার দেন। এই কাজের পাণ্ডুলিপি বর্তমানে [[ভারত|ভারতের পার্শ্ববর্তী প্রজাতন্ত্রের]] [[খুদা বখশ ওরিয়েন্টাল লাইব্রেরি|খুদা বখশ ওরিয়েন্টাল লাইব্রেরিতে]] সংরক্ষিত আছে।<ref name="emd">{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Mawlana Nur Muhammad Azmi|প্রকাশক=Emdadia Library|পাতা=24|ভাষা=bn|লিপির-শিরোনাম=bn:হাদীছের তত্ত্ব ও ইতিহাস|অধ্যায়=2.2 বঙ্গে এলমে হাদীছ|অনূদিত-অধ্যায়=2.2 Knowledge of Hadith in Bengal}}</ref> আজ অবধি, [[সুলতান যওক নদভী|সুলতান জাউক নদভি]] এবং [[মুহাম্মাদ আবদুল মালেক|মুহাম্মদ আবদুল মালেক]] প্রমুখ বাংলাদেশিদের দ্বারা [[ইসলাম]]<nowiki/>সম্পর্কিত আরবি সাহিত্য নিয়মিতভাবে লেখা ও প্রকাশিত হচ্ছে।<ref name="arab">{{বাংলাপিডিয়া উদ্ধৃতি}}</ref>

ঔপনিবেশিক সময় থেকে সরকারী মর্যাদা হারানো সত্ত্বেও, আরবি ভাষাটি অনেক [[মুসলিম]] জামাতে ব্যবহৃত হয় যেমন সাপ্তাহিক [[জুমার নামাজ]] যেখানে বাংলা ছাড়াও আরবি ভাষায় [[খুতবা]] দেওয়া হয়। [[বাংলাদেশের সংবিধান]] আরবি শব্দগুচ্ছ [[বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম|بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ]] দিয়ে শুরু হয়েছে যার অর্থ, “পরম করুণাময়, করুণাময় আল্লাহর নামে”।<ref name="bangladeshconstitution">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|প্রকাশক=Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs|শিরোনাম=The Constitution of the People's Republic of Bangladesh|ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/print_sections_all.php?id=367|সংগ্রহের-তারিখ=5 January 2016|ওয়েবসাইট=Laws of Bangladesh}}</ref>

আরবি মুসলমানদের ধর্মীয় ভাষা। [[কুরআন]], [[সুন্নাহ]], [[হাদিস]] এবং মুসলিম ধর্মতত্ত্ব বাংলা অনুবাদ সহ আরবি ভাষায় পড়ানো হয়। মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত [[প্রবাসী বাংলাদেশী|বাংলাদেশি প্রবাসীরা]] বাংলাদেশে আরবি বলতে পারে এমন লোকের সংখ্যা আরও বাড়িয়েছে। মসজিদ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং [[মাদ্রাসা|মাদ্রাসায়]] পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী [[বাঙালি মুসলিম]] পরিবারগুলোতে আরবি একটি ধর্মীয় ভাষা হিসাবে পড়ানো হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষায় আরবি একটি বাধ্যতামূলক বিষয়। বাংলাদেশের মুসলিম জনসংখ্যার একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ তাদের ধর্মীয় শিক্ষার অংশ হিসেবে আরবি ভাষার পঠন, লেখা এবং উচ্চারণে কোনো না কোনো আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা রয়েছে। আরবি বাংলা ভাষাকেও<ref name="arab2">{{বাংলাপিডিয়া উদ্ধৃতি}}</ref> প্রভাবিত করেছে। এর একটি উদাহরণ হল [[সাতই মার্চের ভাষণ|বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ]], যেখানে অনেক আরবি-উদ্ভুত বাংলা শব্দ ব্যবহার করা ছাড়াও শেষের দিকে ''[[ইনশাআল্লাহ|ইনশাল্লাহ]]'' ('আল্লাহর-ইচ্ছা') উল্লেখ করা হয়েছে।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.thedailystar.net/politics/unesco-recognises-bangabandhu-sheikh-mujibur-rahman-7th-march-speech-memory-of-the-world-1484356|শিরোনাম=Unesco recognises Bangabandhu's 7th March speech|তারিখ=31 October 2017|কর্ম=[[The Daily Star (Bangladesh)|The Daily Star]]}}</ref>

=== ফার্সি ===
{{মূল নিবন্ধ|Persian language in South Asia}}
[[চিত্র:Sharafnama_of_Nizami,_Bengal.jpg|থাম্ব|বাংলার একটি ফার্সি পাণ্ডুলিপি দেখা যাচ্ছে যে [[মহান আলেকজান্ডার|আলেকজান্ডার]] রানী নুশাবার সাথে তার সিংহাসন ভাগ করে নিচ্ছেন। দৃশ্যটি [[নিজামী গঞ্জভী|নিজামী গজনভির]] ''[[নিজামীর ইস্কান্দারনামেহ|ইস্কান্দার নামা]]'' (আলেকজান্ডারের বই) অবলম্বনে তৈরি। পাণ্ডুলিপিটি সুলতান নুসরাত শাহ দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল যিনি ১৫১৯ থেকে ১৫৩৮ সালের মধ্যে রাজত্ব করেছিলেন। (ব্রিটিশ লাইব্রেরি)]]
প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা ও পারস্য একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে আসছিল এবং উপকূলীয় বাংলার আশেপাশে অনেক বাণিজ্য পোস্ট ছিল। লোকেরা ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার সাথে সাথে তারা সুফি প্রচারকদের ভাষা ফার্সির সাথে পরিচিত হয়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.thedailystar.net/star-weekend/longform/news/tale-two-languages-how-the-persian-language-seeped-bengali-1728421|শিরোনাম=A Tale of Two Languages: How the Persian language seeped into Bengali|শেষাংশ=Sarah Anjum Bari|তারিখ=12 Apr 2019|কর্ম=[[The Daily Star (Bangladesh)]]}}</ref> বাংলা ফারসি পণ্ডিত, আইনজীবী, শিক্ষক এবং ধর্মগুরুদের আগমনের সাক্ষী ছিল। [[দিল্লী সালতানাত|দিল্লি সালতানাত]], [[বাংলা সালতানাত]] এবং [[সুবাহ বাংলা|সুবাহ বাংলার]]<nowiki/>অধীনে ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে (১২০৩-১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ) দরবার ভাষার মর্যাদা পাওয়ার পর ভাষার প্রভাব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বাংলায় হাজার হাজার ফারসি বই ও পাণ্ডুলিপি প্রকাশিত হয়। সুলতান [[গিয়াসউদ্দীন আজম শাহ|গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের]] রাজত্বকালকে "বাংলায় [[ফার্সি সাহিত্য|ফার্সি সাহিত্যের]] স্বর্ণযুগ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। পারস্যের কবি [[হাফেজ শিরাজি|হাফেজের]] সাথে সুলতানের নিজস্ব চিঠিপত্র এবং সহযোগিতার মাধ্যমে এর আকার চিত্রিত হয়েছিল; একটি কবিতা যা আজ ''[[হাফেজের দিওয়ান|হাফেজের দিওয়ানে]]'' পাওয়া যাবে।<ref>{{বাংলাপিডিয়া উদ্ধৃতি}}</ref>

বর্তমানে, কিছু [[মাদ্রাসা|মাদ্রাসায়]] ফারসি পড়ানো হয়, যার বেশিরভাগই [[বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ]] বোর্ডের, পাশাপাশি [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও]]।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Moral Economy of the Madrasa: Islam and Education Today|শেষাংশ=Sakurai, Keiko|তারিখ=7 March 2011|প্রকাশক=[[Taylor & Francis]]|পাতা=74}}</ref>

[[দোভাষী (ভাষা)|দোভাষী]] বাংলার একটি ঐতিহাসিক ভাষাশৈলীকে বোঝায় যেখানে উল্লেখযোগ্য ফারসি প্রভাব রয়েছে, উর্দুতে ফারসি ভাষার প্রভাবের মতোই।

=== উর্দু ===
{{মূল নিবন্ধ|Dhakaiya Urdu}}১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সালের বিভাজন-পরবর্তী সময়ে [[উর্দু ভাষা|উর্দু]] (اردو)‬ একটি সরকারী ভাষা ছিল। এটি এখনও বিহার এবং [[উত্তরপ্রদেশ|উত্তর প্রদেশের]]<nowiki/>বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা উচ্চারিত হয়। তারা [[সৈয়দপুর]], [[ঢাকা|ঢাকার]] বিশেষ করে [[পুরান ঢাকা]] এবং বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাস করছে।


==আরও দেখুন==
==আরও দেখুন==

০৭:০৬, ২১ মার্চ ২০২৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বাংলাদেশ ভাষা
সরকারী ভাষা(সমূহ) বাংলা
উল্লেখযোগ্য বেসরকারী ভাষাসমূহ বাংলা উপভাষা, চিটাইঙ্গা
আঞ্চলিক ভাষা(সমূহ) সিলেটি, চাকমা
সংখ্যালঘু ভাষা(সমূহ) বর্মী, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী, চাকমা, ঢাকাইয়া উর্দু, হাজং, তঞ্চঙ্গ্যা, সাদরি, হিন্দি-উর্দু, খাসি, কোডা, মুন্ডারি, প্নার, সাঁওতালি, ওয়ার-জৈন্তিয়া, করুখ, সাউরিয়া পাহাড়িয়া, আটং, চাক, কুকি-চিন, শো, বম, ফালাম, হাকা, খুমি, কোচ, গারো, মেগাম, মৈতৈ, ককবরক, মিজো, ম্রু, পাংখুয়া, মারমা
প্রধান অভিবাসী ভাষা(সমূহ) বিহারি, বর্মী, রোহিঙ্গা, উর্দু
সাধারণ কীবোর্ড লেআউট(সমূহ)
বাংলা জাতীয় লেআউট

বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলা ভাষা বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি ভাষা তথা রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় ভাষা।[] প্রায় ৯৯% বাংলাদেশির মাতৃভাষা বাংলা। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র ও বিশ্বের অন্যতম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ। বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ অনুযায়ী, বৈদেশিক সম্পর্ক ব্যতীত অন্যান্য সকল সরকারি কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার আবশ্যিক করেছে।[] বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র একভাষী রাষ্ট্র বলে বিবেচিত হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বসবাস করে এমন বাংলাদেশি আদিবাসীগণ তাদের নিজ নিজ ভাষা (যেমন চাকমা, মারমা ইত্যাদি) ভাষায় কথা ব���ে।[] এছাড়াও বাংলাদেশে যেমন চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং সিলেট অঞ্চল এর ভাষা আদর্শ বাংলা থেকে অনেকটাই ভিন্ন। স্বাধীনতা পূর্ব পর্যন্ত চাটগাঁইয়া ভাষা নাস্তালিক হরফে লিখা হতো। এথনোলগ অনুসারে, বাংলাদেশে ৩৬টি আদিবাসী ভাষা রয়েছে, যার মধ্যে ১৭টি তিব্বতী-বর্মী, ১০টি ইন্দো-আর্য, ৭টি অস্ট্রোএশিয়াটিকএবং ২টি দ্রাবিড় ভাষা রয়েছে।[] অধ্যাপক শামীম রেজার মতে বাংলাদেশে ৪৪টি আদিবাসী ভাষা রয়েছে। []

২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে বাংলাদেশের ভাষাগত বৈচিত্র্য[]
ভাষা জনসংখ্যা
বাংলা ১৬৩,৫০৭,০২৯
অন্যান্য ১,৬৫১,৫৮৭
মোট ১৬৫,১৫৮,৬১৬

"বাংলাদেশ জুড়ে কথিত ভাষাসমূহ" (২০২২)[]

  বাংলা (৯৯%)
  অন্যান্য (১%)

বাংলাদেশ ও বাঙালী অধ্যুষিত অঞ্চলের ভাষা

এথ্‌নোলগ-এর ২১তম সংস্করণ (২০১৮) অনুসারে বাংলাদেশে ৪১টি ভাষা প্রচলিত আছে সবকটি ভাষাই জীবিত। নিচের সারণিতে এগুলোর বিবরণ দেয়া হল।

ইন্দো-আর্য ভাষা

বাংলাদেশের নিম্নভূমিগুলো বাংলার জাতি-ভাষাগত অঞ্চলের বৃহত্তর, কেন্দ্রীয় এবং পূর্ব অর্ধেক গঠন করে এবং বাংলা ভাষা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী অর্থাৎ বাঙালিরা বলে। এছাড়াও কিছু পূর্ব ভারতীয় ভাষার বৈচিত্র‍্য রয়েছে, যেগুলোকে বাংলার উপভাষা বা পৃথক কিন্তু ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ভাষা হিসাবে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। এগুলোকে একটি উপভাষা ধারাবাহিকতা গঠন হিসাবে ভাবা যেতে পারে।

অ-ইন্দো-আর্য ভাষা

এই অঞ্চলের অ-ইন্দো-আর্য আদিবাসী ভাষাগুলো অস্ট্রোএশিয়াটিক, দ্রাবিড় এবং তিব্বতী-বর্মী পরিবারের সদস্য। এসব ভাষার বেশির ভাগই পাহাড়ি এলাকায় কথ্য।

অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষা

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (যেমন খ্‌মের এবং ভিয়েতনামী) আরও ব্যাপকভাবে কথ্য এবং সুপরিচিত অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষাগুলো কথ্য হলেও, সেই পরিবারের ছোট ভাষাগুলো উত্তর ও পূর্ব বাংলাদেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের দ্বারা বলা হয়। বাংলাদেশে প্রতিনিধিত্বকারী অস্ট্রো-এশিয়াটিক দুটি শাখা রয়েছে।

  • খাসি: সিলেট বিভাগে কথ্য। এছাড়াও মেঘালয়, ভারতের একটি প্রধান ভাষা
  • প্নার/জয়ন্তিয়া: সিলেট বিভাগে কথ্য
  • ওয়ার: সিলেট বিভাগে কথিত
  • সাঁওতালি: রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কথ্য। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খন্ডে ব্যাপকভাবে কথ্য
  • মুন্ডারি: রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কথ্য।
  • কোডা: রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কথ্য।

দ্রাবিড় ভাষা

পশ্চিম বাংলাদেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে দুটি দ্রাবিড় ভাষা বলা হয়ে থাকে।

তিব্বতী-বর্মী ভাষা

ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর ও পূর্ব প্রান্ত বরাবর পার্বত্য অঞ্চলে মূলত তিব্বতী-বর্মী ভাষার ভাষাভাষীরা বসবাস করে। আদিবাসী তিব্বতী-বর্মী-ভাষী সম্প্রদায়গুলো বাংলাদেশের উত্তর, পূর্ব এবং বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব অংশে, প্রাথমিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের মাধ্যমে পাওয়া যায়।

  • আরাকানি: আরকানি বা মারমা বা রাখাইন ভাষাও বলা হয়। প্রধানত পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং দক্ষিণ কক্সবাজারে কথা বলা হয়। এছাড়াও রাখাইন রাজ্য, মিয়ানমারের একটি প্রধান ভাষা।
  • আ'টং: ময়মনসিংহ বিভাগে কথ্য।
  • চাক: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য।
  • চিন ভাষা: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য
  • কোচ: ময়মনসিংহ বিভাগে কথ্য
  • গারো: প্রধানত ময়মনসিংহ বিভাগে কথ্য। এছাড়াও মেঘালয়, ভারতের একটি প্রধান ভাষা।
  • মেগাম: ময়মনসিংহ বিভাগে কথিত গারোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত
  • মৈতৈ (মণিপুরী): সিলেট বিভাগে কথ্য। এছাড়াও ভারতের মণিপুর রাজ্যের একটি প্রধান ভাষা
  • মিজো: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য। এছাড়াও ভারতের মিজোরাম রাজ্যের একটি প্রধান ভাষা
  • ম্রু: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য।
  • পাংখুয়া: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য
  • ত্রিপুরী: পার্বত্য চট্টগ্রামে কথ্য। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের একটি প্রধান ভাষা
ভাষার নাম ভাষাভাষীর সংখ্যা অবস্থান উপভাষা শ্রেণীকরণ
অসমীয়া ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
আরাকানীয় ২ লক্ষ দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ; পার্বত্য চট্টগ্রাম মারমা (পাহাড়ি), রাখাইন (উপকূলীয়) চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, লোলো-বর্মী, বর্মী, দক্ষিণ বর্মী
আশো চিন ১৪২২ (১৯৮১ আদমশুমারি) পার্বত্য চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম, লেমিয়ো, মিনবু, সাইংবাউন, সান্দোওয়ে, থায়েতমিয়ো চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, দক্ষিণী, শো
উসুই ৪ হাজার পার্বত্য চট্টগ্রাম ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, শ্রেণীকরণ নেই
ওয়ার ১৬ হাজার উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশে ভারতের সাথে সীমান্তে অস্ট্রো-এশীয়, মন-খমের, উত্তর মন-খমের, খাসীয়
ওঁরাও / কুরুখ/কোঙ্কণী ভাষা ১৬৫,৬৮৩ রাজশাহী বিভাগ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা বরাইল সাদরি, নুরপুর সাদরি, উচাই সাদরি, মকান টিলা সাদরি ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বিহারি
কক বরক ১ লক্ষ জামাতিয়া, নোয়াতিয়া, রিয়াং, হালাম, দেববর্ম চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, ঝিংপো-কোনিয়াক-বোডো, কোনিয়াক-বোডো-গারো, বোডো-গারো, বোডো
কুরুখ দ্রাবিড়, উত্তর
কোচ বানাই, হারিগায়া, সাতপারিয়া, তিনতেকিয়া, ওয়ানাং চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, ঝিংপো-কোনিয়াক-বোডো, কোনিয়াক-বোডো-গারো, বোডো-গারো, কোচ
খুমি চিন ১১৮৮ (১৯৮১ আদমশুমারি) খিমি, য়িন্দি, খামি, ন্গালা চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, দক্ষিণী, খুমি
খাসি মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ খাসি (চেরাপুঞ্জি), লিঙন্গাম অস্ট্রো-এশীয়, মন-খমের, উত্তর মন-খমের, খাসীয়
গারো ১ লক্ষ ময়মনসিংহ, টাংগাইল, শ্রীপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা, সিলেট, ঢাকা আবেং, আচিক চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, ঝিংপো-কোনিয়াক-বোডো, কোনিয়াক-বোডো-গারো, বোডো-গারো, গারো
চাক সাড়ে ৫ হাজার আরাকান নীল পাহাড়, বান্দরবান, ইত্যাদি নেই
চাকমা ৩ লক্ষের বেশি পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম শহর ৬টি উপভাষা আছে ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
চাটগাঁইয়া ১ কোটি ৪০ লক্ষ চট্টগ্রাম বিভাগ ও আরাকান রাজ্য রোহিঙ্গা, চাকমা ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
তঞ্চঙ্গ্যা ১৭,৬৯৫ পার্বত্য চট্টগ্রাম ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
তিপ্পেরা ১ লক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম ৩৬টি উপভাষা ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, শ্রেণীকরণ নেই
দারলং ৯০০০ চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
প্নার ৪ হাজার উত্তর-পূর্বে ভারতের সাথে সীমান্তে; জাফলং, তামাবিল, জৈন্তাপুর অস্ট্রো-এশীয়, মন-খমের, উত্তর মন-খমের, খাসীয়
পাংখু ২২৭৮ (১৯৮১ আদমশুমারি) বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
ফালাম চিন চোরেই, জান্নিয়াত চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, উত্তর
বর্মী ৩ লক্ষ মায়ানমার সীমান্তে বোমাং চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, লোলো-বর্মী, বর্মী, দক্ষিণ বর্মী
বাংলা ২৬ কোটির বেশি কেন্দ্রীয়, পশ্চিমী (খারিয়া ঠার, মাল পাহাড়িয়া, সারাকি), দক্ষিণ-পশ্চিমী বাংলা, উত্তর বাংলা (কোচ, শ্রীপুরী), রাজবংশী, বাহে, পূর্ব বাংলা (পূর্ব কেন্দ্রীয়, সিলেটি), হাইজং, দক্ষিণ-পূর্বী বাংলা (চাকমা), গান্ডা, ভাঙ্গা ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
বাওম চিন ৫৭৩৩ (১৯৮১ আদমশুমারি) পার্বত্য চট্টগ্রাম চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ৪০ হাজার রাজার গাং, মাদই গাং ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
ভারতীয় প্রতীকী ভাষা বধিরদের প্রতীকী ভাষা
মুন্ডারি হাসাদা, লাতার, নাগুরি, কেরা অস্ট্রো-এশীয়, মুন্ডা, উত্তর মুন্ডা, খেরওয়ারি, মুন্ডারি
ম্রু ৮০ হাজার পার্বত্য চট্টগ্রামের ২০০টি গ্রামে চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, ম্রু
মিজো ১ হাজার মিজো পাহাড়, চট্টগ্রাম, সিলেট রালতে, দুলিয়েন, নগেলতে, মিজো, লে চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
মেগাম ৬৮৭২ উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, ঝিংপো-কোনিয়াক-বোডো, কোনিয়াক-বোডো-গারো, বোডো-গারো, গারো
মৈতৈ ১৫ হাজার সিলেট চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, মৈতৈ
রংপুরী ১.৫ কোটি বাহে ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
শেন্দু ১ হাজার চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, দক্ষিণী, শো
সাঁওতালি দেড় লক্ষ কারমালি, কমরি-সাঁওতালি, লোহারি-সাঁওতালি, পাহারিয়া, মাহালি মাঁঝি অস্ট্রো-এশীয়, মুন্ডা, উত্তর মুন্ডা, খেরওয়ারি, সাঁওতালি
সিলেটি ১ কোটি সিলেট বিভাগ ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
হাকা চিন ১২৬৪ ক্লাংক্লাং, জোখুয়া, শোনশে চীনা-তিব্বতী, তিবতী-বর্মী, কুকি-চিন-নাগা, কুকি-চিন, মধ্য
হাজং ইন্দো-ইউরোপীয়, ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-আর্য, পূর্ব অঞ্চল, বাংলা-অসমীয়া
হো অস্ট্রো-এশীয়, মুন্ডা, উত্তর মুন্ডা, খেরওয়ারি, মুন্ডারি

অন্যান্য ভাষা

ইংরেজি

২০২৩ সালে ইংরেজি এখন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ভাষা। ১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন আইন শুরু হওয়ার আগে, সরকারি কাজে ইংরেজির যথেষ্ট উপস্থিতি ছিল, তবে ১৯৮৭ সাল থেকে সরকারে ইংরেজির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। দেশের ব্রিটিশ উপনিবেশের কারণে, ইংরেজি এখনও বাংলাদেশে একটি ব্যাপকভাবে কথিত এবং সাধারণভাবে বুঝতে পারা ভাষা।[] সকল স্কুল, কলেজবিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে পড়ানো হয়। উপরন্তু, বাংলাদেশে ইংরেজি-মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে যা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে।[] ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ ইংরেজি ভাষার কোর্স অফার করে।

অন্যান্য সার্ক দেশগুলোর পরিস্থিতির মতো, ইংরেজি ভাষার জ্ঞানে উল্লেখযোগ্য বৈষম্য রয়েছে; জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সাবলীলভাবে বা এমনকি স্থানীয়ভাবে ইংরেজিতে কথা বলে (বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণির মধ্যে), যখন জনসংখ্যার এমনকি একটি বড় অংশের ইংরেজি সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান নেই। মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের মধ্যে অনেকেই পেশাগত প্রয়োজনের কারণে সাবলীলভাবে পড়তে ও লিখতে পারে, তবে ইংরেজি বলতে তাদের অসুবিধা হতে পারে।

ঔপনিবেশিক আমলে আইনগুলো ইংরেজিতে লেখা হতো। বর্তমানে, বেশিরভাগ আইন বাংলায় লেখা হয়, ব্যতিক্রম হল ১৯৮৭ সালের আগে পাস করা আইনগুলোর সংশোধন, যা সাধারণত ইংরেজিতে লেখা হয়। সরকার এবং ব্যাঙ্কসমূহে ব্যবহৃত অনেক আইনি, প্রশাসনিক এবং আর্থিক ফর্ম কেবলই ইংরেজিতে। বিচার বিভাগেও ইংরেজি ব্যবহৃত হয়।[]

আরবি

বাংলাদেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরবীতে সাইনবোর্ড রয়েছে।

১২০৩ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজির বাংলা জয়ের পর থেকে আরবি (عربي) ব্রিটিশ রাজের সময় পর্যন্ত একটি সরকারী ভাষার মর্যাদা উপভোগ করেছিল। যাইহোক, এটির উপস্থিতি 8ম শতাব্দীতে বাণিজ্যের ভাষা হিসাবে। ১৩শ শতাব্দীতে, মুসলিম ধর্ম প্রচারক তাকিউদ্দীন আল-আরাবি বাংলাদেশের প্রথম দিকের ইসলামিক প্রতিষ্ঠান যা অক্ষত ধ্বংসাবশেষ বলে মনে করা হয় তা প্রতিষ্ঠা করেন। কাদি রুকনুদ্দিন সমরকান্দির Ḥawḍ al-Ḥayāh (দ্বাদশ শতক), আবু তাওওয়ামার Maqāmāt, Majmūʿah Khānī fī ʿAyn al-Maʿānī(১২৮০) কামিলুদ্দিনের কৃতকর্ম হিসেবে মধ্যযুগীয় বাংলায় আরবি সাহিত্য প্রথম বিকাশ লাভ করে। ১৪শতকের বাঙালি পণ্ডিত নূর কুতুব আলমের। ইসলামিক পণ্ডিত মুহাম্মদ ইবনে ইয়াজদান বখশ বাংলা একডালায় হাতে সহীহ আল-বুখারির তিনটি খণ্ড প্রতিলিপি করে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহকে উপহার দেন। এই কাজের পাণ্ডুলিপি বর্তমানে ভারতের পার্শ্ববর্তী প্রজাতন্ত্রের খুদা বখশ ওরিয়েন্টাল লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে।[১০] আজ অবধি, সুলতান জাউক নদভি এবং মুহাম্মদ আবদুল মালেক প্রমুখ বাংলাদেশিদের দ্বারা ইসলামসম্পর্কিত আরবি সাহিত্য নিয়মিতভাবে লেখা ও প্রকাশিত হচ্ছে।[১১]

ঔপনিবেশিক সময় থেকে সরকারী মর্যাদা হারানো সত্ত্বেও, আরবি ভাষাটি অনেক মুসলিম জামাতে ব্যবহৃত হয় যেমন সাপ্তাহিক জুমার নামাজ যেখানে বাংলা ছাড়াও আরবি ভাষায় খুতবা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের সংবিধান আরবি শব্দগুচ্ছ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ দিয়ে শুরু হয়েছে যার অর্থ, “পরম করুণাময়, করুণাময় আল্লাহর নামে”।[১২]

আরবি মুসলমানদের ধর্মীয় ভাষা। কুরআন, সুন্নাহ, হাদিস এবং মুসলিম ধর্মতত্ত্ব বাংলা অনুবাদ সহ আরবি ভাষায় পড়ানো হয়। মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা বাংলাদেশে আরবি বলতে পারে এমন লোকের সংখ্যা আরও বাড়িয়েছে। মসজিদ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী বাঙালি মুসলিম পরিবারগুলোতে আরবি একটি ধর্মীয় ভাষা হিসাবে পড়ানো হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষায় আরবি একটি বাধ্যতামূলক বিষয়। বাংলাদেশের মুসলিম জনসংখ্যার একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ তাদের ধর্মীয় শিক্ষার অংশ হিসেবে আরবি ভাষার পঠন, লেখা এবং উচ্চারণে কোনো না কোনো আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা রয়েছে। আরবি বাংলা ভাষাকেও[১৩] প্রভাবিত করেছে। এর একটি উদাহরণ হল বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, যেখানে অনেক আরবি-উদ্ভুত বাংলা শব্দ ব্যবহার করা ছাড়াও শেষের দিকে ইনশাল্লাহ ('আল্লাহর-ইচ্ছা') উল্লেখ করা হয়েছে।[১৪]

ফার্সি

বাংলার একটি ফার্সি পাণ্ডুলিপি দেখা যাচ্ছে যে আলেকজান্ডার রানী নুশাবার সাথে তার সিংহাসন ভাগ করে নিচ্ছেন। দৃশ্যটি নিজামী গজনভির ইস্কান্দার নামা (আলেকজান্ডারের বই) অবলম্বনে তৈরি। পাণ্ডুলিপিটি সুলতান নুসরাত শাহ দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল যিনি ১৫১৯ থেকে ১৫৩৮ সালের মধ্যে রাজত্ব করেছিলেন। (ব্রিটিশ লাইব্রেরি)

প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা ও পারস্য একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে আসছিল এবং উপকূলীয় বাংলার আশেপাশে অনেক বাণিজ্য পোস্ট ছিল। লোকেরা ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার সাথে সাথে তারা সুফি প্রচারকদের ভাষা ফার্সির সাথে পরিচিত হয়।[১৫] বাংলা ফারসি পণ্ডিত, আইনজীবী, শিক্ষক এবং ধর্মগুরুদের আগমনের সাক্ষী ছিল। দিল্লি সালতানাত, বাংলা সালতানাত এবং সুবাহ বাংলারঅধীনে ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে (১২০৩-১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ) দরবার ভাষার মর্যাদা পাওয়ার পর ভাষার প্রভাব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বাংলায় হাজার হাজার ফারসি বই ও পাণ্ডুলিপি প্রকাশিত হয়। সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের রাজত্বকালকে "বাংলায় ফার্সি সাহিত্যের স্বর্ণযুগ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। পারস্যের কবি হাফেজের সাথে সুলতানের নিজস্ব চিঠিপত্র এবং সহযোগিতার মাধ্যমে এর আকার চিত্রিত হয়েছিল; একটি কবিতা যা আজ হাফেজের দিওয়ানে পাওয়া য��বে।[১৬]

বর্তমানে, কিছু মাদ্রাসায় ফারসি পড়ানো হয়, যার বেশিরভাগই বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ বোর্ডের, পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও[১৭]

দোভাষী বাংলার একটি ঐতিহাসিক ভাষাশৈলীকে বোঝায় যেখানে উল্লেখযোগ্য ফারসি প্রভাব রয়েছে, উর্দুতে ফারসি ভাষার প্রভাবের মতোই।

উর্দু

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সালের বিভাজন-পরবর্তী সময়ে উর্দু (اردو)‬ একটি সরকারী ভাষা ছিল। এটি এখনও বিহার এবং উত্তর প্রদেশেরবসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা উচ্চারিত হয়। তারা সৈয়দপুর, ঢাকার বিশেষ করে পুরান ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাস করছে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "৩৷ রাষ্ট্রভাষা"গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানআইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৬ 
  2. "বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭"আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৬ 
  3. ফকির, এ বি এম রেজাউল করিম (ডিসেম্বর ২০১০)। "Language Situation in Bangladesh"। The Dhaka University Studies৬৭: ৬৬–৭৭। 
  4. "Bangladesh"Ethnologue। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১৯ 
  5. "ULAB introduces Bangla and Literature Department"Dhaka Tribune। ২০২৩-০২-২৩। ২০২৩-০২-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২৬ 
  6. http://www.bbs.gov.bd › site › page Population-and-Housing-Census - বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "bbs.gov.bd" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  7. "'Language of Bangladesh, Culture"Bangladesh.com 
  8. "English medium education system in Bangladesh"The Daily Observer 
  9. "Bangla Rules in All Domains of National Life"Daily Sun। ২০১৯-০৪-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৫ 
  10. Mawlana Nur Muhammad Azmi। "2.2 বঙ্গে এলমে হাদীছ" [2.2 Knowledge of Hadith in Bengal]। হাদীছের তত্ত্ব ও ইতিহাস। Emdadia Library। পৃষ্ঠা 24। 
  11. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  12. "The Constitution of the People's Republic of Bangladesh"Laws of Bangladesh। Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১৬ 
  13. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  14. "Unesco recognises Bangabandhu's 7th March speech"The Daily Star। ৩১ অক্টোবর ২০১৭। 
  15. Sarah Anjum Bari (১২ এপ্রিল ২০১৯)। "A Tale of Two Languages: How the Persian language seeped into Bengali"The Daily Star (Bangladesh) 
  16. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  17. Sakurai, Keiko (৭ মার্চ ২০১১)। The Moral Economy of the Madrasa: Islam and Education TodayTaylor & Francis। পৃষ্ঠা 74। 

আরো পড়ুন

বহিঃসংযোগ